>>>>গিয়ারভীশরীফ কি (এগারোশরীফ)<<<<
===========================
পীরানে পীর দস্তেগীর গাউছুল আ’জম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী রাদিয়াল্লাহু
আনহুর ভক্তবৃন্দ প্রতি চন্দ্রমাসের এগারো তারিখে তাঁর স্মরণে খতম ওয়াজ ও
জিকির মাহফিলের আয়োজন করে উপস্থিত ভক্তবৃন্দের মধ্যে তবারুক বিতরণ করতেন।
এই আয়োজন গিয়ারভীশরীফ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে।
আল্লামা ইয়াফিয়ী রাদিয়াল্লাহু আনহু ‘কুররাতুন নাজিরা’ নামক কিতাবে লিখেন,
একদা গাউছুল আ’জম রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলেপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের ফাতেহা শরীফ আদায় করলেন এই ফাতেহা শরীফের নিয়াজ কবুল হল যে,
তিনি প্রত্যেক চন্দ্রমাসের এগারো তারিখ ইহাকে নির্দিষ্ট করে দিলেন।
ক্রমান্বয়ে এই আমল তাঁর দিকে নিসবত (সম্পর্কিত) হয়ে গেল, এমনকি চন্দ্রমাসের
এগারো তারিখে তাঁর উরস মোবারক অনুষ্ঠিত হতে লাগল।
আলেমকুল শিরমণি আল্লামা শেখ আব্দুল হক মোহাদ্দেসে দেহলভী রাদিয়াল্লাহু আনহু
মা ছাবাতা মিনাচ্ছুন্নাহ নামক কিতাবে লিখেছেন- ‘গিয়ারভীশরীফ আমাদের দেশে
প্রসিদ্ধি লাভ করেছে এবং তা আমাদের (কাদেরিয়া তরিকার) বুজুর্গানে দ্বীনের
বিশেষ আমল হিসেবে পরিগণিত, যাঁরা তাঁর (গাউছে পাকের) বংশধরের মধ্যে
ভারতবর্ষে বসবাস করছেন।’
হিজরি চতুর্দশ শতকের মোজাদ্দেদ আ’লা হযরত আল্লামা শাহ্ আহমদ রেজা খাঁন বেরলভী রাদিয়াল্লাহু আনহু লিখিত ‘ফাতাওয়া রেজভীয়া’
নামক কিতাবের দশম জিলদে লেখা আছে, ‘গিয়ারভীশরীফ’ পালন করা শরীয়তসম্মত উত্তম ও ভাল কাজ।
অতএব প্রত্যেক তরিকতপন্থি মুসলমানের জন্য অযুর সাথে সম্মানসহকারে
গিয়ারভীশরীফ পালন করা উচিত। কেন না ‘বাহজাতুল আছরার’ নামক কিতাবে বর্ণিত
আছে, পীরানে পীর দস্তেগীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী রাদিয়াল্লাহু আনহু
বলেছেন, যে ব্যক্তি (আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভ করার জন্য) নিজেকে আমার
দিকে সম্পর্ক করবে, তার নাম আমার গোলামদের দপ্তরে শামিল হবে এবং আল্লাহপাক
কবুল করবেন। যদিও সে কোন নিন্দনীয় রাস্তায় থাকে আল্লাহপাক তাঁকে তাওবা করার
তাওফিক দেবেন এবং সে আমার মুরিদগণের মধ্যে হবে। নিশ্চয় আল্লাহপাক আমার
মুরিদান ভক্তবৃন্দকে বেহেশ্ত দান করার ওয়াদা করেছেন।
গিয়ারভীশরীফের তারতীব
===============
প্রথমে দরূদেতাজশরীফ পড়ে শুরু করবেন এবং নিম্নলিখিত প্রত্যেক তাসবীহ বা দোয়া ১১ বার করে পাঠ করবেন।
১। বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ১১ বার
২। আছতাগফিরুল্লাহ (শেষ পর্যন্ত) ১১ বার
৩। দরূদশরীফ ১১ বার
৪। সূরায়ে ফাতেহাশরীফ ১১ বার
৫। সূরায়ে এখলাসশরীফ ১১ বার
৬। আচ্ছালাতু ওয়াচ্ছালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ১১ বার
৭। আচ্ছালাতু ওয়াচ্ছালামু আলাইকা ইয়া হাবিবাল্লাহ ১১ বার
৮। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ১১ বার
৯। ইল্লাল্লাহ ১১ বার
১০। আল্লাহু ১১ বার
১১। আল্লাহ ১১ বার
১২। হু আল্লাহ ১১ বার
১৩। হু ১১ বার
১৪। হুয়াল্লাহুল্লাজী লা ইলাহা ইল্লাহু ১১ বার
১৫। আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু ১১ বার
১৬। আল লা ইলাহা ইল্লাহু ১১ বার
১৭। আনতাল হাদী আনতাল হক্ব লাইছাল হাদী ইল্লাহু ১১ বার
১৮। হাছবী রাব্বি জাল্লাল্লাহ ১১ বার
১৯। মা-ফি ক্বালবী গাইরুল্লাহ ১১ বার
২০। নূর মোহাম্মদ ছাল্লাল্লাহ ১১ বার
২১। লা- মা’বুদা ইল্লাল্লাহ ১১ বার
২২। লা- মাওজুদা ইল্লাল্লাহ ১১ বার
২৩। লা- মাকছুদা ইল্লাল্লাহ ১১ বার
২৪। হুয়াল মুছাব্বিরুল মুহীতু আল্লাহ ১১ বার
২৫। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়ুমু ১১ বার
২৬। আচ্ছালাতু ওয়াচ্ছালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ১১ বার
২৭। আচ্ছালাতু ওয়াচ্ছালামু আলাইকা ইয়া হাবিবাল্লাহ ১১ বার
২৮। ইয়া শেখ সৈয়দ সুলতান আব্দুল কাদের জিলানী
শাইয়ান লিল্লাহ ১১ বার
২৯। ফাছাহহিল ইয়া এলাহি কুল্লা ছুয়াবিম বিহুরমতি ছায়্যিদিল আবরার ছাহহিল বিফাদলিকা ইয়া আজিজু
১১ বার
৩০। দরূদশরীফ ১১ বার
৩১। কাসিদায়ে গাউছিয়াশরীফ (সম্পূর্ণ পাঠ)
৩২। মিলাদশরীফ পাঠ
৩৩। জিকিরশরীফ
ক) লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ১০০বার
খ) ইল্লাল্লাহ ১০০বার
গ) আল্লাহু ১০০বার
৩৪। শাজরাশরীফ পাঠ
৩৫। আখেরী মোনাজাত
৩৬। তাবারুক বিতরণ
(আমালুল মুছলিমীন থেকে সংগৃহীত)
No comments:
Post a Comment