Saturday, September 19, 2015

বৃটিশের দালাল কারা ছিলো? ইমাম আহমদ রেজা খাঁন (আলাইহির রহমত) না ওহাবী-দেওবন্দীরা?

আ’লা হযরত বনাম দেওবন্দী ওলামা- চুলচেরা বিশ্লেষণ:
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

ইতিহাস কথা বলে।ইতিহাস সবকিছুর স্বাক্ষী।মানুষের অতীতের দর্পণ ইতিহাস।কোন কিছু হের ফের করলে ইতিহাসের দর্পনে তা ভেসে উঠে। বৃটিশ সরকার ভারতবর্ষ থেকে মুসলমানদের সমূলে নিধনের এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র অটল। মুসলমানদের দমনের জন্যে শুরু করলো আত্যাচার- নির্যাতন সর্বোপরি হিংসা আক্রমণ।ঈমানী বলে বলীয়ান মুসলমানেরা দমবার নয়।অমোঘ শক্তিই যেন তাদের প্রতিনিয়তই অটল থাকার সাহস যোগাচ্ছে।বৃটিশ সরকার চিন্তা করলো যে,কিসে তাদের শক্তি ও সাহস যোগাচ্ছে? অদম্য মুসলমানরা কেন দমবার নয়? বিভিন্ন প্রশ্ন তাদের অন্তরে বাঁধতে লাগলো।এ ব্যাপারে তারা একটি বৈঠকও করলো।বৈঠকে আলোচনার প্রেক্ষিতে তারা বুঝতে পারলো যে, মসজিদ,মাদরাসা ও মক্তব ইত্যাদি মুসলমানদের মনোবল বৃদ্ধি ও অনুপ্রেরণার পিছনে সাহায্য করছে। তাই তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে সিদ্ধান্ত নিল যে,এসব প্রতিষ্ঠানগুলো কে সরকার থেকে কোন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবেনা। এগুলো উৎখাত করার নিমিত্তে বিভিন্ন প্রকার ফন্দি করলো।

ইত্যবসরে গোপনে সুন্নী মুসলমানদেরকে দমানোর জন্যে বৃটিশ সরকার সৈয়দ আহমদ বেরলভী ও ইসমাইল দেহলভীকে ভাড়া করে নেয়।এই সুযোগে সৈয়দ আহমদ বেরলভী মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর ওহাবী আক্বিদা আমদানী করে তার প্রধান খলিফা ইসমাইল দেহলভীকে সঙ্গী করে ভারতবর্ষে প্রচার প্রসার করতে থাকে এবং ওহাবী ব্যতিত অপরাপর মুসলমানদের কাফির ফতোয়া দিতে শুরু করে।ভারতবর্ষে ওহাবী আক্বিদাকে সুদৃঢ় করার জন্যে সৈয়দ আহমদ বেরলভী মালফুজাত কুফরী আক্বিদা সম্বলিত ‘সিরাতুল মুস্তাকীম’ নামক একটি পুস্তিকা প্রণয়ন করেন। এমনকি ইসমাইল দেহলভীও নবী- অলীদের শানে বেয়াদবীমুলক কুফরি কালাম সম্বলিত ‘তাকভীয়াতুল ঈমান’ নামক অপর একটি পুস্তিকা লিখেন।

তারা উভয়ে বৃটিশ সরকারের পক্ষে ফতোয়া দিয়ে বালাকোটের শিখ ও পাঠান সুন্নী মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।সেই যুদ্ধে তারা উভয়ে সুন্নীদের হাতে নিহত হয়।তাদের মৃত্যুর পর মৌলভী কাশেম নানুতুবী বৃটিশদের সাথে যোগসাজশ ও দালালী করে ওহাবী আক্বিদাকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে‘ দেওবন্দ মাদরাসা’ প্রতিষ্ঠা করে ওহাবীদের এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করেন। তাদের এই কুফরী সুলভ আক্বিদা যখন ভারতবর্ষে রন্দ্রে বে রন্দ্রে প্রবেশ করলো,তখন মুসলমানগণ দিশেহারায় পড়ে গেলো।ঠিক তেমনি মুহুর্তে ভারতে বেরেলী নগরের আওতাধীন হাবুলী মহল্লার অন্তর্গত শাহ মাওলানা নক্বী আলী খানের (রাহমাতুল্লাহি আলাইহির)গৃহে ১২৭২ হিজরির ১০ই শাওয়াল,১৮৫৬ খ্রীষ্টাব্দের ১৪ই জুন শনিবার জোহরের সময় এই ধরাধামে জম্ম নেন চতুর্দশ শতাব্দীর সর্বজন স্বীকৃত মুজাদ্দিদ ইমামে আহলে সুন্নাত বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক,বাতিলদের যমদুত,অসংখ্য কিতাবের ক্ষুরধার লেখক শাহ মাওলানা আহমদ রেজা খাঁন ফাযেলে বেরেলভী (আলাইহির রহমত)।

তাঁর সাথে ওহাবী দেওবন্দীদের ঝগড়া কোন সম্পত্তি নিয়ে নয়।শুধু বাক বিতণ্ডা ছিলো আক্বিদা ও ইশকে রাসুলের জন্য।তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর কোন উত্তর দিতে না পেরে মিথ্যা চল- চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে উনাকে বৃটিশের দালাল বলে প্রচার করতে থাকে। ইতিহাস পর্যালোচনা না করে পুর্ববর্তী ওহাবী দেওবন্দী মৌলভীদের অন্ধ অনুসরণ করে “এছলাহুল মুসলেমীন” পুস্তিকার ১৩২পৃষ্ঠায় অজ্ঞ লেখক মৌলভী আহমদ গনি- আ’ লা হযরত (আলাইহির রহমত)কে বৃটিশ পেট পূজারী আলেম বলে মিথ্যা অপবাদ দেন।

বৃটিশের দালাল কারা ছিলো? ইমাম আহমদ রেজা খাঁন (আলাইহির রহমত) না ওহাবী-দেওবন্দীরা?

ইতিহাস কি বলে দেখুন:

আমি বিস্তারিত তথ্য দিয়ে এই পরিসরে তা পাঠকমহলের সুবিবেচনার জন্যে সমর্পন করছি। বৃটিশ দালাল ও পেট পূজারী আলেম হলো দেওবন্দী ওহাবীরা: ইমাম আহমদ রেজা খান (আলাইহির রহমত) বৃটিশর দালাল ও পেট পূজারী আলেম কখনও ছিলেননা। তিনি তাঁর সমগ্র হায়াতে জিন্দেগী কলম যুদ্ধে অবর্তীণ হয়ে অসংখ্য কিতাবাদি রচনা করে দ্বীনে ইসলামের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন।তাঁর সমগ্র হায়াতকে যদি তাঁর রচিত কিতাবগুলো দ্বারা ভাগ দেয়া হয়,দিন প্রতি ২/৩ খানা কিতাব পড়বে।
পাঠক মহল ভেবে দেখুন,তিনি বৃটিশের দালালী ও পেট পূজা করার সময় পেলেন কখন? বরং তাঁর জীবন চরিত আলোচনা করলে দেখা যায়, তিনি সবসময় বৃটিশ বিরোধী ফতোয়া দিতেন।

মূলতঃ বৃটিশের দালাল ও পেট পূজারী আলেম ছিলেন সৈয়দ আহমদ বেরলভী হতে শুরু করে দেওবন্দী-ওহাবী মৌলভীরা।ইতিহাসে এ ব্যাপারে যথেষ্ট স্বাক্ষ্য ও সবুত রয়েছে।ইতিহাস যা বলে:--

|
|
|

(১) ইংরেজদের পক্ষে মৌলভী ইসমাইলের দেলভী ও সায়্যিদ আহমদ বেরলভীর ফতোয়া:

(ক)অনুবাদঃ ওয়াজের মাঝে,কোনো ব্যক্তি তার (ইসমাইল) কাছে জানতে চায়,আপনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার কেনো ওয়াজ করেন না? তারাও তো কাফির।তাঁর উত্তরে মৌলভী ইসমাইল সাহেব বলেন যে, ইংরেজদের আমলে মুসলমানদের কষ্ট হচ্ছেনা।আর আমরা যখন ইংরেজদের প্রজা হই।এ কারণে আমাদের ধর্মমতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধে আমাদের শরীক না হওয়া ফরজ।উপরন্তু এই সময় অস্ত্র সজ্জিত হাজারো মুসলমান এবং যুদ্ধের অগণিত সাজ সরঞ্জাম শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য হিন্দুস্থানে জমা হয়ে যায়।
(মক্বালাত-এ-স্যার সায়্যিদ ৯ম,খন্ড ১৪২পৃষ্ঠা)

(খ) অনুবাদঃ ইহাও একটি বিশুদ্ধ বর্ণনা যে,কলকাতায় অবস্থানকালে একদিন মাওলানা ইসমাইল শহীদ ওয়াজ করছেন,তখন এক ব্যক্তি মাওলানার কাছে প্রশ্ন করেন যে, ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা জায়েজ কিনা? তার উত্তরে মাওলানা (ইসমাঈল দেহলভী) বলেন যে,এমন নিষ্টাবান ও নিরপেক্ষ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কোনভাবে জায়েজ নয়।
(সাওয়ানেহে আহমদী,মতবুয়া-এ- ফারুকী,দিল্লী,পৃষ্ঠা নং-৭৩)

(গ) অনুবাদঃ যখন তিনি শিখদের বিরুদ্ধে  যুদ্ধ করতে তাশরিফ নিচ্ছেন, তখন কোন ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এতোদূর কেনো যাচ্ছেন? ইংরেজ যে এদেশের শাসক,তারা কি ইসলাম ধর্মের বিরোধী নন? ঘরে ঘরে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে হিন্দুস্থান কেড়ে লও।লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে আপনার সাহায্যকারী হবে।সায়্যিদ সাহেব উত্তর দিলেন কারো দেশ কেড়ে নিয়ে আমার রাজত্ব করতে চাইনা।ইংরেজদেরও না,না শিখদের রাজ্য কেড়ে লওয়া আমাদের উদ্দেশ্য।ইংরেজ সরকার যদিও ইসলাম ধর্মের মুনকের হয়।কিন্তু মুসলমানদের উপর কোন প্রকার নির্যাতন ও অত্যাচার করছেনা এবং তাদের কোন ফরজ কাজও অবশ্যকরণীয় ইবাদতেও বাঁধা দিচ্ছেনা।
(মওজে কাওছার পৃষ্ঠা নং- ২৫)

(ঘ)ওহাবী নজদীর একান্ত বিশ্বস্ত ইতিহাস লেখক- মির্জা হায়রত বলেন-

“কলকাতায় মাওলানা ইসমাইল সাহেব ওয়াজ করা আরম্ভ করেন এবং শিখদের নির্যাতন এর অবস্থা পেশ করেন,তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করে,আপনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে ফতোয়া কেনো দেন না? তিনি উত্তর দেন তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা কোনভাবে ওয়াজিব নয়। প্রথমত,আমরা তাদের প্রজা। দ্বিতীয়ত,আমাদের আরকান(ফরজ কাজসমূহ) পালনে ওরা কোনরূপ হস্থক্ষেপ করেনা।তাদের রাজত্ব্যে আমরা সামগ্রিকভাবে স্বাধীন।বরং কেউ তাদের উপর আক্রমণ করলে মুসলমানদের উপর ফরজ হবে যে, তার সাথে যু্দ্ধ করা এবং স্বাধীন সরকারের উপর যাতে কোন দাগ না লাগে।”
(হায়াতে তাইয়্যিবা- পৃষ্ঠা-২৯৬)

(ঙ) "আল হায়াত বা’দাল মমাত" গ্রন্থে আছে- “তিনি ( ইসমাইল দেহলভী) তার পীর সায়্যিদ আহমদকে ইমাম স্বীকার করে মুসলমানদের একটি দল নিয়ে যুদ্ধের জন্য পাঞ্জাব পৌঁছেন। ইংরেজ সরকার তাঁর এই বাসনায় কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা ও জঠিলতা সৃষ্টি করলেন না।” (আল হায়াত বা’দাল মমাত পৃষ্ঠা নং- ২০৩)

(চ)এশায়াতুস সুন্নাহ গ্রন্থে আছে- “সায়্যিদ সাহেব,মৌলভী ইসমাইল সাহেব ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করার কখনো ইচ্ছা করেননি।মৌলভী ইসমাঈল কলকাতায় তার এক ওয়াজ মাহফিলে প্রকাশ্যে বলেন যে, ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আমাদের জন্য জায়েজ নয়। (এশায়াতুস সুন্নাহ-২য় খন্ড,জমীমা ৫,৬ পৃষ্ঠা)

(ছ) তাহরিক্বে জিহাদ কা সরমায়া গ্রন্থের ৪নং পৃষ্ঠায় আছে- “হযরতের শাহাদাতের পর যে অবস্থা সৃষ্ঠি হয়, সে সময় যে কিতাবগুলি হযরত সায়্যিদ ও তাঁর উদ্দ্যেশ্যের উপর লিখা হয়,প্রত্যেকটিতে এই কথা বার বার প্রমাণ করা হয় যে,ইংরেজদের বিরুদ্ধে হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ কোন আন্দোলন করেন নি।
(তাহরিক্বে জিহাদ কা সরমায়া- পৃষ্ঠা নং-৪)

(জ) সায়্যিদ আহমদ বেরলভী বলেন- “তাঁরা নিজেদের ছেলে-মেয়েদের এবং আসবাবপত্র রক্ষনা-বেক্ষণের জন্যে ইংরেজ সরকারের হাতে রেখে যান এবং তাদের মাযহাব মতে,ছেলে-মেয়েদের রক্ষকের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা কঠোরভাবে নিষেধ”।
(মক্বালাত-এ-স্যার সায়্যিদ ৯ম খন্ড, ১৪৮পৃষ্ঠা)

(ঞ) "হিন্দুস্থান কি পহেলি ইসলামী তাহরিক" ৫৪-৫৫ পৃষ্ঠায় রয়েছে-
“সে সময় কাশ্মীরের রাজা গুলাভ শিং ও মুজাহিদের মাঝে যু্দ্ধ চলছিলো।রাজা হেরে যায় এবং সে ইংরেজদের ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করে। যা সে সময় পাঞ্জাব পর্যন্ত দখল করেছিলে।ইংরেজ সরকার মাওলানা বেলায়ত আলীকে জানিয়ে দিলেন যে,এখন গুলাভ শিং এর উপর আক্রমণ করা স্বয়ং ইংরেজ সরকারের সাথে যুদ্ধ ক্রয় করে নেওয়া হবে।ইংরেজ সরকারের কৌশল ছিল মুজাহিদদের মাধ্যমে শিখদের দূর্বলকরা হয়।
|
|
|
(২) ইংরেজদের খাদ্য সরবরাহে সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী:

সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী সর্বপ্রথম জীবনী লেখক জনাব জাফর থানেশ্বরী বলেন:-

“নানা প্রকার ভারে ভারে খাদ্যদ্রব্য নিয়ে একজন ঘোড়ায় চড়ে আসছে। নৌকার নিকট এসে জিজ্ঞাসা করে যে,পাদ্রী সাহেব কই? সালাম ও কুশল বিনিময়ের পর নিবেদন করে যে, তিনদিন হতে এখানে হুজুরের আগমন বার্তার জন্য চাকর নিযুক্ত করা হয়েছিলো।সে আজকে আমায় খবর দেয়।এই খাদ্য-দ্রব্য হুজুর ও সমস্ত বাহিনীর জন্য তৈয়ার করে নিয়ে আসছি।দয়া করে গ্রহণ করুন। হযরত স্বীয় বাহিনীকে হুকুম দেন যে, তাড়াতাড়ি খাদ্য নিজ নিজ বর্তনে নিয়ে বাহিনীর মধ্যে বন্টন করে দাও। সে ইংরেজ প্রায় দুই ঘণ্টা যাবত হুজুরের নিকট উপস্থিত থাকে। (সাওয়ানেহে আহমদী পৃষ্ঠা নং-৪৯)

|
|
|

(৩) ইংরেজদের নিমন্ত্রণ গ্রহণে সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী-

আবুল হাসান আলী নদভী বলেন- “আসরুলি নামক স্থানের ৪ মাইল পূর্বে হযরত এর কাছে একজন ইংরেজ হিন্দুস্থানী স্ত্রী এসে খাওয়ার দাওয়াত দিলে,তিনি (যেতে) অস্বীকার করেন।পরে ইংরেজ আসলে তিনি বলেন,আপনার দাওয়াত আমি কেনো গ্রহণ করব না।তিনি উনার দাওয়াত গ্রহণ করেন।ঔ দিন তাঁর দাওয়াত খান”।
(সিরাতে সায়্যিদ আহমদ শহীদ- ১৪,২০,২১৯পৃষ্ঠা)

|
|
|

(৪) ইংরেজদের গোয়েন্দা হিসেবে সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী- হাশিয়া-এ-মক্বালাত-এ-স্যার সায়্যিদ ১৬তম খন্ড, ২৫১পৃষ্ঠায় রয়েছে-

“হযরত শহীদ যুদ্ধ উদ্দেশ্যে সিব্দু ও সীমান্ত প্রদেশে প্রবেশ করেন।(যা ইংরেজদের দখলে ছিল না)তাদের সম্বন্ধে তখন সাধারণত এই স্নদেহ পোষণ করা হয়েছে যে,তাঁরা ইংরেজদের গুপ্তচর।এই ভাবে সন্দেহ করার কারণ হচ্ছে ইংরেজদের সাথে হযরত শহীদের গভীর ও মধুর সম্পর্ক ছিলো”।
সায়্যিদ আহমদ সাহেবের অন্যতম ভক্ত জনাব গোলাম রাসুল মেহেরও একথা অকপটে স্বীকার করেছেন যে, সীমান্ত প্রদেশের আলেমগণ সায়্যিদ আহমদ বেরেলভীকে ইংরেজ গোয়েন্দা ও গুপ্তচর চিহ্নিত করে ফতোয়া প্রদান করেন।

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ: আমি আপনাদের সমীপে যে সমস্ত কিতাবগুলোর দ্বারা এই যাবৎ উদ্ধৃতি প্রদান করেছি, সবগুলো দেওবন্দী ও ওহাবীদের লিখা।তাই তাদের উক্তিগুলোর হুবহু অনুবাদ করতে গিয়ে ইসমাইল দেওবন্দী ও সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী সাথে 'শহীদ' সংযুক্ত করেছি।শরীয়তের পরিভাষায় ওরা কেউ শহীদ নয়।

|
|
|

(৫) মৌলভী শিব্বির আহমদ দেওবন্দী বলেন-

“মৌলভী আশরাফ আলী থানবী, মৌলভী রশিদ আহমদ গাঙ্গুলী, মৌলভী খলিল আহমদ আম্বটুবী, মৌলভী ইসমাইল ও মৌঃ ইলিয়াছ প্রমুখ দেওবন্দী মৌলভীদেরকে ব্রিটিশ গভর্ণরের পক্ষ থেকে নিয়মিত মাসিক ৬০০টাকা ভাতা হিসেবে দেওয়া হতো”।
(মাক্বালামাতুছ ছদরাইন)

|
|
|

(৬) স্যার সৈয়দ আহমদ ওহাবী সম্পর্কে বলেন-

“বিদ্রোহী (সিপাহী বিপ্লব) চলাকালীন সময়ে ওহাবীদের আনুগত্য ছিল দৃঢ় এবং তাঁরা বৃটিশ সরকারের প্রতি চির অনুগত ছিল”। (প্রাগুক্ত,পৃষ্ঠা নং-১৭৭)

তিনি অন্যত্র বলেন- “বৃটিশ শাসনের অধীনে ওহাবীরা যে ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করে,তা আর কোথাও নেই। তাদের জন্য ভারত হলো দারুল আমান (শান্তির দেশ)”।
(মাক্বালাত-এ-স্যার সৈয়দ আহমদ ৯ম খন্ড,মজলিসে তরক্কীয়ে আদব,লাহোর ১৯৬২ইং পৃষ্ঠা নং- ২১২)

তিনি অন্যত্র বলেন- “বৃটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা অপরাধ”।তিনি আরো বলেন-“আমি নিজেই ওহাবী।ওহাবী হওয়া কোন অপরাধ নয়।কিন্তু বৃটিশ সরকারের অবাধ্য হওয়া একটি আপরাধ”।
(আলতাফ হোসাইন হালী রচিত হায়াতে জাওয়াইদ পঞ্চম অধ্যায়-লাহোর, ১৯৬৫ইং পৃষ্ঠা নং- ১৭৫)

|
|
|

(৭) দেওবন্দীদের অন্যতম মুরুব্বী মৌলভী রশিদ আহমদ গাঙ্গুলী বলেন-

“আমি বাস্তবিকই বৃটিশ সরকারের অনুগত থেকেছি।মিথ্যা অভিযোগ আমার কোন ক্ষতি করতে পারেব না। যদি আমি নিহত হই তবুও সরকারই (বৃটিশ) সর্বেসর্বা।তার যা ইচ্ছা করতে সে সক্ষম”। (আশেক আলী মীরাটী কৃত তাযকিয়াতুর রশিদ ১ম খন্ড মাহবুব প্রেস,দিল্লী, পৃষ্ঠা নং- ৮০)

|
|
|

(৮) ওহাবী মৌলভী শিবলী নোমানী বলেন-

“বৃটিশ আনুগত্য করা মুসলমানদের জন্য ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বাধ্যতামূলক”।
(মুহাম্মদ ইকরাম লিখিত শিবলী নামা পৃষ্ঠা নং-২৪৫ এবং সুলায়মান নদভীর প্রণীত “হায়াতে শিবলী” আজমগড় ১৯৪৩ইং পৃষ্ঠা নং-৬৩৪)

|
|
|

(৯) ক্বারী মুহাম্মদ সোলায়মান মনসুর পুরী দেওবন্দী বলেন-

“আমি আশা করি যে,কোন মুসলমানই আল্লাহ তায়ালার হুকুমের আলোকে সরকার অবাধ্য কিংবা বিরুদ্ধচারণকারী হতে পারবেন না। কেননা তারা( বৃটিশরা)অপবিত্র কাজকর্ম,অনৈতিক ক্রিয়া ও বিদ্রোহ নিষেধ করেন।মুসলমানদের উচিত চিরদিন এই আদেশ স্মরণ রাখা”। (তাঁর সভাপতির ভাষণ,নিখিল ভারত আহলে হাদিস কনফারেন্স,আগ্রা- ৩০/০৩/১৯২৮ইং)

|
|
|

(১০) জনৈক সরকারী কর্মকর্তা মাদরাসা-এ-দেওবন্দে ভাষণে বলেন–
“এ মাদরাসা সরকারের বিরুদ্ধে নয়। বরং সরকারের অনুগত ও সাহায্যকারী”।
(আখবারে আঞ্জুমান,পাঞ্জাব,লাহোর, তারিখ- ১৯/০২/১৮৭৫ইং)

|
|
|

(১১) ভূপালের নবাব সিদ্দীক হাসান খান বলেন-

“আমি ৩০ বৎসর যাবৎ ভূপালের বাসিন্দা।বৃটিশ সরকার সার্বিকভাবে এ রাজ্যের এবং বিশেষ করে দীনহীন সিদ্দীক আলী খানের আনুগত্য ও শুভাকাংখা লক্ষ করেছেন।
(তাঁর প্রণীত তরজুমানে ওহাবীয়া,লাহোর, ১৩১৩ হিজরি, পৃষ্ঠা নং-২৯) এবং তিনি অন্যত্র ১৮৫৭ সাকের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে বলেন- “ভারত্র সংঘটিত এই বিদ্রোহকে জিহাদ হিদেবে বর্ণনা করাই হলো তাদেরই কাজ,যারা ইসলামকে বুঝেনা এবং দেশে গণ্ডগোল,হট্টগোল বাধাতে চাই”। (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা নং-১০৬)

|
|
|

(১২) মাওলানা মুহাম্মদ আলী জাওহর নিজ পাপ স্বীকার কালে বলেন-

“আমরা ১৫০০শত কোটি রুপী যুদ্ধের জন্য(তুর্কী মুসলমানদের বিরুদ্ধে) দান করেছি এবং লক্ষ লক্ষ সৈন্য যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রেরণ করেছি।আমরা আমাদের ঈমান বিক্রি করে দিয়েছি। মুসলমানগণ তাদের প্রাতৃগণকে হত্যা করেছেন।কিন্তু এ বিশাল কোরবানীর জন্য ক্ষতিপূরণ অত্যন্ত হতাশা ব্যঞ্জক”।
(১৯১৯ইং সালে অমৃতসারে নিখিল ভারত কংগ্রেজ স্টেশনে মুহাম্মদ আলী জাওহর ভাষণ,তথ্যসুত্র: রইস আহমদ জাফরের সংকলিত আওরাকে গুমগুশতা,লাহীর ১৯৭৮ ইং পৃষ্ঠা নং-১২০)

|
|
|

(১৩) দেওবন্দীদের হাকিমুল উম্মত মৌলভী আশরাফ আলী থানবী প্রকাশ্যে বৃটিশের পক্ষে বলেন যে, “প্রাচীন কাল থেকে খ্রীষ্টান্দের আইন ও ধর্ম অন্য কোন ধর্মের বিরোধীতা করেনা অথবা সমাজে আমাদের সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনা।তাই তাদের (বৃটিশদের) প্রজা হওয়া অনুমতি প্রাপ্ত”।
(১০ই সফর ১৩৪৯হিজরী,১৯৩১ইং তথ্যসুত্র: রইস আহমদ জাফরী কৃত আওরাকে গুম গুশতা, পৃষ্ঠা নং- ৩২৪)

|
|
|

(১৪) মাওলানা সাব্বির আহমদ দেওবন্দী ওহাবী মৌলভী আশরাফ আলী থানবী সম্পর্কে বলেন-

“হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী ছিলেন আমাদের পুণ্যবান আলেম ও বুজুর্গ।কিছু মানুষ এমনকি বলতেও শুনেছেন যে,তিনি সরকার (বৃটিশ) থেকে মাসিক ৬০০ রুপী গ্রহণ করেছেন।একই সময়ে তিনি এই কথাও বলেছেন যে,বৃটিশ সরকার তাকে কত টাকা বাতা দিতেন।তা তিনি জানতেন না।( মুহাম্মদ জাকী দেওবন্দী কৃত মাক্বালাতুস ছদরাইন, ২৭শে জিলহজ্ব ১৩৬৪ হিজরী,দারুল ইশাআত দেওবন্দ)

|
|
|

(১৫) মাওলানা হাফিজুর রহমান সিওহারভী ওহাবী তবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলীয়াছ মেওয়াটী সম্পর্কে বলেন-

“মাওলানা ইলিয়াছের তবলীগী আন্দোলন হাজী রশিদ আহমদের মাধ্যমে বৃটিশ সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পেতো।পরবর্তীকালে এটা বন্ধ হয়ে যায়”।
(প্রাগুক্ত পৃঃ নং- 8)

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

প্রিয় পাঠকবৃন্দ! আমি পূর্বেই বলেছি যে,আ’লা হযরত আজিমুল বরকত চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ইমাম আহমদ রেজা খাঁন ফাযেলে বেরলভী (আলাইহির রহমত) কখনোই বৃটিশের দালাল ও পেট পূজারী ছিলেন না।এ ব্যাপারে ইতিহাসে যথেষ্ট প্রমাণাদি বিদ্যামান।ইতিহাসের পাতা থেকে আপনাদের সমীপে প্রমাণ্য দলীল পেশ করছি।

(১) মুহাম্মদ আলী বলেন-

“বৃটিশরা কখনোই ইমাম আহমদ রেযা খাঁনকে দাওয়াত করেননি। যেমনিভাবে তারা দাওয়াত করেছিলেন মোলভী সৈয়দ আহমদ বেরলভীকে”।
(মাখযানে আহমদী,মুফীদেয়াম,আগ্রা কর্তৃক প্রকাশিত,পৃষ্ঠা নং-৬৭)

(২) হোসাইন আহমদ মাদানী দেওবন্দী বলেন-

“বৃটিশরা কখনোই ইমাম আহমদ রেযা খাঁনকে সাহায্য করেননি। যেমনিভাবে তারা সাহায্য করেছিলেন মোলভী সৈয়দ আহমদ বেরলভীকে”। (নখশে হায়াত,দিল্লী ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত পৃষ্ঠা নং-১২-১৩)

(৩) বৃটিশরা হেজাযের রাজা আব্দুল আজীজ ইবনে সউদকে যেভাবে “ সিতারায়ে হিন্দ ”উপাধী দান করেছিলেন,সেভাবে তারা কখনোও ইমাম আহমদ রেজা খানকে কোন পদক বা উপাধি দান করেননি। (১৯১৬ইং সালে বৃটিশ সরকার “সিতারায়ে হিন্দ” উপাধিটি রাজা ইবনে সউদকে দান করেন।বৃটিশ সরকার উপসাগরীয় প্রতিনিধি স্যার পারসি কক্স তাকে (সউদ) কুয়েতে এ পদকটি পরিয়ে দেন।
“সারগুযাশত-এ-হেজায” গ্রন্হের মধ্যে এর ছবি ছাপানো হয়েছে,১৮ পৃষ্ঠার উল্টো পৃষ্ঠায় দেখুন।

(৪) মৌলভী নাযির হুসাইনের মতে- ইমাম আহমদ রেযাখানকে বৃটিশ কমিশনার কোন সনদ দেননি।এই মর্মে- “মৌলভী নাযির হুসাইন দিল্লীর একজন প্রখ্যাত আলেন যিনি সংক্টময় মুহুর্তগুলোতে বৃটিশের প্রতি অনুগত ছিলেন”।
(দিল্লীর কমিশনারের চিঠি, তারিখ-১০/০৮/১৮৮৩ইং, তথ্যসুত্র: ফযল হুসেইন-বিহারীকৃত আল হায়াত বা’দাল মামাত করাচী-১৯৫৯ইং পৃষ্ঠা নং-১৪০)

(৫) মুহাম্মদ ইকরাম ও সোলায়মান নদভী বলেন-

“নদওয়াতুল ওলামার মতো ইমাম আহমদ রেযা খান কোন বৃটিশ কর্তা ব্যক্তি দ্বারা তাঁর মাদরাসা দারুল উলুম মানযারে ইসলামের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করান নি”। (শিবলী নামা,পৃষ্ঠা নং- ২৪৫,হায়াতে শিবলী পৃষ্ঠা নং- ৪৮২)
তারা উভয়ে বলেন- “নদওয়াতুল ওলামার মতো মানযারে ইসলাম মাদরাসার জন্যে কোন দানও মঞ্জুর করা হয়নি”। (শিবলী নামা, পৃষ্ঠা নং- ১৭৮,হায়াতে শিবলী পৃষ্ঠা নং- ৬৩১-৬৩২)

(৬) দারুল দেওবন্দের মতো ইমাম আহমদ রেযা খান (আলাইহির রহমত) কখনোই কোন অমুসলিম নেতাকে তাঁর মাদরাসার একাডেমিক কিংবা ধর্মীয় সভায় সভাপতিত্ব করার জন্যে দাওয়াত করেন নি।তিনি মজলিসে ওলামাকে হেয় প্রতিপন্ন করেন নি,কোন অমুসলিমকে সভাপতি বানিয়ে।
(দৈনিক জংগ,১৬/০৩/১৯৮০ইং পৃষ্ঠা নং ১২ কলাম নং-৮। প্রাগুক্ত,২১/০৩/১৯৮০ইং পৃষ্ঠা নং ১২, কলাম নং-৮। প্রাগুক্ত,২৩/০৩/১৯৮০ইং পৃষ্ঠা নং ২,কলাম নং-৬।
প্রাগুক্ত,২০/০৩/১৯৮০ইং পৃষ্ঠা নং ১, কলাম নং-৩।
প্রাগুক্ত,২২/০৩/১৯৮০ইং পৃষ্ঠা নং ১, কলাম নং-৫ এবং ৬।
প্রাগুক্ত,৩/০৩/১৯৮০ইং পৃষ্ঠা নং ৪, কলাম নং-৭ও৮।)

(৭) ইমাম আহমদ রেযা খানের জনৈক সমসামিয়ক ব্যক্তিত্ব এবং ঘটনা প্রবাহের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দ আলতাফ আলী বেরলভী, যিনি পাকিস্তান এডুকশনাল কনফারেন্স করাচী এর সেক্রেটারী জেনারেল ছিলেন; তিনি বলেন-
“রাজনৈতিকভাবে বলতে গেলে হযরত মাওলানা আহমদ রেযা খান বাস্তবিকই একজন স্বাধীনতা প্রেমিক ছিলেন।তাঁর হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে তিনি বৃটিশ ও তাদের শাসনকে ঘৃণা করতেন।তিনি কিংবা তাঁর দুই পুত্র মাওলানা হামিদ রেযা খাঁন ও মোস্তফা রেযা খাঁন কখনোই শামসুল উলামা (উলামাদের সুর্য) জাতীয় খেতাব অর্জনের চিন্তাও করেননি।ভারতের শাসকবর্গ,সরকারী কর্মকর্তা কিংবা প্রাদেশিক অমাত্যবর্গের সাথেও তাদের কোন সম্পর্ক ছিলনা”। (প্রাগুক্ত দৈনিক করাচী ২৫শে জানুয়ারী ১৯৭৯,পৃষ্ঠা-৬,কলাম ৪ এবং ৫)

(৮) বৃটিশ সরকার ছাড়াও ইমাম আহমদ রেযা খান বৃটিশ রাজা বাদশাহদের পছন্দ করলেন না। সৈয়দ আলতাফ আলী বেরলভী এ সম্পর্কে লিখেন-

“সৈয়দ আলহাজ্ব আইয়ুব আলী রেজভীর ভাষ্যনুযায়ী ইমাম আহমদ রেযা খাঁন এমনভাবে চিঠির খামে ডাক টিকেট সংযুক্ত করতেন যার দরুণ রাণী ভিক্টোরিয়া,এডওয়ার্ড-৮ এবং জর্জ-৫ এর মাথা নিচের দিকে থাকতো”। (দৈনিক জং,করাচী, তাং ২৫/১/১৯৭৯ইং,পৃষ্ঠা-৬,কলম-৫ )

উপরক্ত গুরুত্বপুর্ণ তথ্যবলীর প্রেক্ষিতে প্রমাণিত হয় যে,আলা হযরত (আলাইহির রহমত) ছিলেন ইসলামী জগতের একজন জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভাধর আলেম। ইতিহাস স্বাক্ষী রয়েছে যে,তিনি কখনো বৃটিশ বা ইংরেজ বেনীয়াদের পক্ষে ছিলেন না।বরং তিনি মনে প্রাণে তাদের ঘৃণা করতেন।আমি পূর্বেই বিভিন্ন বরণ্য দলীল দ্বারা তা প্রমাণ করেছি এবার বৃটিশ বা ইংরেজ বেনীয়াদের সম্পর্কে আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খাঁ (আলাইহির রহমত)এর দ্ব্যর্থহীন মন্তব্য শুনুন-

(৯) “ইংরেজ রীতি ও ফ্যাশন থেকে এবং নাস্তিক ও মুক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি প্রাপ্তি আত্নিক প্রশান্তির কারণ। আল্লাহ আমাদের হেদায়ত দিন।কিন্তু এগুলো অর্জনের জন্য শুধু মাত্র সাহায্য প্রত্যাখান কিংবা সংশ্লিষ্ঠতা নাচক করলেই চলবেনা,বরং সৈয়দ  আহমদ যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে তাকে নির্বাপন করতে হবে।এখানে বহুলোক এর দ্বারা অক্রান্ত দেখা যাচ্ছে”। (ইমাম আহমদ রেযাখান (রহঃ) কৃত আল মুহাজ্জাত আল মুতামিনা ফি আয়াত আল মুমতাহিনা, লাহোর-এ-প্রকাশিত,পৃষ্ঠা নং-৯৩)

(১০) ইউরোপীয় পোষাক পরিচ্ছেদ পরিধান করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।এ সকল লেবাছে নামাজ আদায় করা মাকরুহে তাহরীমি যা প্রায় হারাম। যদি কেউ ইসলামী পোষাক নামায না পড়ে,তবে সে পাপী হবে এবং সে খোদা তায়ালার শাস্তিযোগ্যও হবে। আল্লাহ মাফ করুন,যিনি সর্বশক্তিমান ও আত্যন্ত ক্ষমাশীল”। (ইমাম আহমদ রেযা খাঁন লিখিত আল আতায়া আল নব্বীয়া ফিল ফাতাওয়া আল রাযাভীয়া ৩য় খন্ড,পৃষ্ঠা নং-৪৪২, লাইলপুরে প্রকাশিত।)

(১২) ওয়াল্লাহ! এই জাতি (বৃটিশ) কৃত অযৌক্তিক ও আবেগ প্রাণ! এটা সত্যি দুঃখজনক যে,এই জাতি খোদাদ্রোহী হওয়ার মত ঔদ্ধত্যভাব পোষণ করছে।আর মুসলমানগণ ও তাদের আবর্জনাময় মতবাদ গ্রহণ করছেন এই বলে যে,নিশ্চয় আমরা আল্লাহর কাছ হতে এবং নিশ্চয় তাঁর কাছে আমরা প্রত্যাবর্তন করবো”। (ইমাম আহমদ রেযা খান প্রণীত আল সামসাম আলা মোশাককাক ফি আয়াতে উলুম আল আরহাম,১৩১৫ হিজরি-১৮৯৭ইং সালে লিখিত এবং লাহোরে প্রকাশিত; পৃষ্ঠা নং-১৯/২০ দ্র:)

সুতরাং “এছলাহুল মুছলেমীন” পুস্তিকার ইলমহীন লেখক আহমদ গণি গড্ডালিকা প্রবাহে গাঁ ভাসিয়ে দিয়েছেন।তাই হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হয়ে পড়েছেন।ভূরি ভূরি প্রমাণাদি অবলোকন করে এখন নিশ্চয় কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে যাবেন।ইতিহাস নীরব স্বাক্ষী।বিজ্ঞজনেরা তা সহজেই বুঝতে পারবেন যে,ইতিহাস রদবদল করলে তা অবশ্যই ধরা পড়বে। আহমদ গণি ইতিহাস বিকৃত করেছেন।ইমাম আহমদ রেযা খান (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)এসব মিথ্যা অপবাদ থেকে পূত-পবিত্র।আসলে বৃটিশের দালাল ও পেটপুজারী আলেম ছিলেন দেওবন্দী ওহাবীরা।

আমি এ ব্যাপারে গাদা গাদা ঐতিহাসিক প্রমাণাদি পেশ করেছি। বিজ্ঞ পাঠক মহলের কাছে আর সন্দেহের অবকাশ থাকেনা যে, সত্যকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য।

No comments:

Post a Comment