Friday, December 25, 2015

সকল ঈদের সেরা ঈদ, ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)

না’হমাদুহু ওয়া নুসল্লি ওয়া নুসাল্লিমু ’আলা রাসূলিহিল কারীম। আম্মা বা’দ, বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম। সবাইকে সেরা ঈদ তথা পবিত্র মীলাদুন্নবীর (’আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালাম) মুবারকবাদ। ঈদ মুবারক। এ পবিত্র দিনে রহমাতুল্লিল ’আলামীন সায়্যিদুনা মুহাম্মাদ মুস্তাফা আহমাদ মুজতবা (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা শরীফে তাশরীফ আনেন। মীলাদুন্নবী ও ওফাতুন্নবীর তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে, ১২ই রবিউল আউয়ালই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বহুল প্রচারিত তারিখ। অবশ্য ওফাতুন্নবীর তারিখ নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন, বরং মীলাদুন্নবীর চেয়ে ওফাতুন্নবীর তারিখ নিয়ে বেশি মতবিরোধ রয়েছে; যদিও এ মতভেদ মীলাদুন্নবী উপদযাপনে কোনোই বাধা নয়; যেমনটি লাইলাতুল কদরের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। কেউ অন্য কোনো তারিখ প্রাধান্য দিয়ে মীলাদুন্নবী উদযাপন করলেও কোনো বাধা নেই। মীলাদুন্নবী উদযাপন করা সুন্নত। নবীজী রোজা রেখে এবং বিভিন্ন সাহাবী নানাভাবে এ অনুষ্ঠান উদযাপন করেছেন। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে মীলাদ ও কিয়াম মাহফিল, জুশনে জুলুস, না’তের আসর, জিয়াফত, দায়-খয়রাত ইত্যাদির মাধ্যমে মীলাদুন্নবী উদযাপিত হয়ে থাকে।

কুরআন মজীদ ও হাদীছ শরীফে ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপনের ব্যাপারে অর্থবহ ইঙ্গিত রয়েছে। যেমন-

বলুন: আল্লাহর ফযল (দয়া) ও রহমতের (মেহেরবানী) ব্যাপারে তাদের আনন্দ-উৎসব করা উচিত। আর এটা তাদের কাছে যা কিছু রয়েছে - তা থেকেও উত্তম (সূরা ইউনূস: ৫৮)।

এ হুকুম আম বা সাধারণ তথা যে কোনো নিয়ামতের বেলায় প্রযোজ্য। অথচ ভণ্ড মৌলভীরা এ হুকুমকে খাস বলে প্রচার করে এ আয়াতে কারীমার অপব্যাখ্যা করে থাকে!

যেহেতু, হুজুরে পুরনূর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহুতা’লার সেরা রহমত, ফযল ও নিয়ামত - সেহেতু, বহু সুন্নী বরেণ্য আলেম যেমন- ইমাম কাস্তাল্লানী শাফিয়ী তাঁর আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়ায়, ইমাম ফাসী মালিকী তাঁর শারহুল কুরতুবিয়ায়, আল্লামা মুহাম্মাদ দুসুকী মালিকী তাঁর হাশিয়াতুদ দারদীরে, আল্লামা আল-খারাশী মালিকী তাঁর শারহুল খারাশীতে, আল্লামা সাওভী মালিকী তাঁর বুলগাতুস সালিক লি আক্বওয়াইল মাসালিকে, আল্লামা মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ মালিকী তাঁর আদ-দুররুল ছামীনে, ইমাম বারজাঞ্জী শাফিয়ী তার মাওলিদু বারজাঞ্জীতে প্রমুখ (’আলাইহিমুর রহমাহ) মীলাদুন্নবীকে “ঈদ” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং মীলাদুন্নবীকে “ঈদ” হিসেবে আখ্যায়িত করাটা ওলামায়ে দ্বীনেরই সিদ্ধান্ত। তদুপরি, মোল্লা আলী আল-ক্বারী হানাফী ইমাম সাখাভী শাফিয়ীর বরাতে উল্লেখ করছেন: “মক্কাবাসীর কাছে নবীজীর জন্মদিনের গুরুত্ব ঈদের চেয়েও বেশি ছিলো।” (আল-মাওরাদুর রাভী ফী মাওলিদিন নবী) বিখ্যাত সূফী ও আরেফবিল্লাহ আলিম শাইখ আব্দুল আজীজ দাব্বাগ (কুদ্দিসা সিররুহুল আঝীজ) বলেছেন: “নেককার ও সূক্ষ্মদর্শী আলেমগণ সকল ধর্মীয় ও জাগতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের চেয়েও তাতে (মীলাদুন্নবীর প্রতি) বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন (আল দুররুল মাসূন ফী যিকরি মাওলিদুন নবীয়িল মা’মূন)। আল-কুরআন এবং সহীহ, হাসান, জঈফ - যে কোনো সনদের হাদীছে মীলাদুন্নবী উদযাপনে কোনোই নিষেধাজ্ঞা নেই। কাজেই, যারা এতে নিষেধ করে - ওরা দুশমনে রাসূল, আহলে ইবলিশ ও জাহেল। মীলাদুন্নবীকে সেরা ঈদ হিসেবে উদযাপন করাটা যেহেতু কোনো সুন্নতকে আঘাত করে না - সেহেতু, এটি মন্দ বিদয়াত হওয়ারও কোনোই সম্ভবনা নেই।

কিছু অজ্ঞ আপত্তি করে: “সাহাবায়ে কেরাম মীলাদুন্নবী উদযাপন করেননি কেন? পরবর্তীকালে যারা তা করেছেন - তাঁরা কি তাঁদের চেয়েও বড় আশেকে রাসূল?” এর দু’টি উত্তর রয়েছে।

প্রথম উত্তর: খোলাফায়ে রাশেদীন (রিদ্বওয়ানুল্লাহিতা’লা ’আলাইহিম) মীলাদুন্নবীর ফযীলত বর্ণনা করে মানুষকে তা উদযাপনে উৎসাহিত করেছেন। যেমন- বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ইমাম ইবনে হাজার হাইতামী শাফিয়ী মাক্কী (’আলাইহির রহমাহ) তাঁর আন-নি’মাতুল কুবরা আলাল আ’লাম ফী মাওলিদি সায়্যিদিল উলদি আযম কিতাবে বর্ণনা করেছেন:

১। হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বলেন: কেউ নবীজীর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মীলাদ শরীফ পড়তে এক দিরহাম খরচ করলে, সে বেহেশতে আমার সাথী হবে!

২। হযরত উমার ফারূক (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বলেন: কেউ নবীজীর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মীলাদ শরীফকে সম্মান করলে, সে যেনো ইসলামকে জিন্দা করলো!

৩। হযরত উছমান যুন্নুরাঈন (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বলেন: কেউ নবীজীর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মীলাদ শরীফ পড়তে এক দিরহাম খরচ করলে, সে যেনো বদর ও হুনাইনের যুদ্ধে শরীক হলো!

৪। হযরত আলী মুর্তজা (কাররামাল্লাহুতা’লা ওয়াজহাহুল কারীম) বলেন: কেউ নবীজীর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মীলাদ শরীফকে সম্মান করলে এবং মীলাদ শরীফ পড়ার ব্যবস্থা করলে,  সে ঈমান না নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় হবে না এবং বিনে হিসাবে বেহেশতে যাবে!

কোনো কোনো সাহাবী মীলাদুন্নবী উদযাপনও করেছেন। যেমন- আল্লামা হাফিয আবূল খাত্তাম উমার ইবনে হাসান ইবনে দাহইয়া আল-কালবী (’আলাইহির রহমাহ) তাঁর আত-তানভীর ফী মাওলিদিল বাশিরিন নাযীরে লিখেছেন:

হযরত ইবনে আব্বাস (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বর্ণনা করেন, একদিন তিনি তাঁর ঘরে নবীজীর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাদত শরীফের ঘটনা আলোচনা করছিলেন। তখন নবীজী (’আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালাম সেখানে এসে) ফরমালেন: তোমাদের জন্যে আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেলো!

হযরত আবূ দারদা (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বর্ণনা করেন, একদিন তিনি নবীজীর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে আমির আনসারীর বাড়ীতে গেলেন। তিনি তখন তাঁর সন্তান-সন্তনি ও ঘনিষ্ঠদের নবীজীর (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মীলাদ শরীফের ঘটনা শিখাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন: আজ সেদিন! আজ সেদিন!! তখন নবীজী (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমালেন: আল্লাহ তো তোমার জন্যে রহমতের দরজাগুলো খুলে দিয়েছেন, ফেরেশতারা তোমার জন্যে মাগফিরাত কামনা করছে এবং যারা তোমার মতো আমল করবে, তারা তোমার মতোই নাজাত পাবে!

ইবনে দাহইয়া ও ইবনে হাজার হাইতামী উভয়ই বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ছিলেন এবং এসব হাদীছ শরীফ বণর্না করে এগুলোর সনদ চ্যালেঞ্জ করেননি। অথচ সনদে কোনো ত্রুটি থাকলে - তা বর্ণনা করাটা মুহাদ্দিছীনে কেরামের নৈতিক দায়িত্ব। তদুপরি, আল্লামা ইউসূফ নাবহানী শাফিয়ীও তাঁর জাওয়াহিরুল বিহারে এসব বর্ণনাগুলো বিনে সমালোচনায় গ্রহণ করেছেন। সর্বোপরি, যেসব আলিম উল্লিখিত হাদীছ শরীফগুলো তাঁদের কিতাবে বিনে প্রতিবাদে গ্রহণ করেছেন - সেগুলো তাঁদের মতে গ্রহণযোগ্য। তাই, আমাদের কাছেও গ্রহণযোগ্য।

দ্বিতীয় উত্তর: হাঁ, কোনো গায়ের সাহাবীর মর্তবার কখনো কোনো সাহাবীর সমান হতে পারবে না বটে। কিন্তু তাঁদের চেয়েও নবীজীকে বেশি ভালোবাসা, তাঁর প্রিয়পাত্র হওয়া, এমন কি কারো কোনো নেক আমল কোনো সাহাবীর নেক আমলের সমান হওয়াও মরফু হাদীছের আলোকে সম্ভব বৈকি। যেমন-

১। হযরত আবূ হুরাইরা (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমান: আমার উম্মতের মাঝে আমাকে সেসব লোকই বেশি ভালোবাসবে, যারা আমার (ওফাতের) পরে আসবে! তাঁদের কেউ এমনো আশা করবে যে, যদি সে আমাকে দেখতো, তাহলে আমার জন্যে তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদও কুরবানী করে দিতো (মিশকাত: ৬০২৪ ও সহীহ মুসলিম শরীফাঈন)।

২। হযরত আমর ইবনে শুয়াইব (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) তাঁর বাবা থেকে এবং তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন, একদিন আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাহাবীদের) জিজ্ঞেস করলেন: ঈমানের দিক থেকে কোন সৃষ্টি তোমাদের কাছে বিস্ময়কর? তাঁরা বললেন: ফেরেশতারা। তিনি ফরমালেন: তারা কি আর ঈমান না এনে পারে? তারা যে তাদের প্রভুর কাছেই রয়েছে? তাঁরা বললেন: তাহলে, নবীগণ। তিনি ফরমালেন: তাঁরা কি আর ঈমান না এনে পারেন? তাঁদের প্রতি যে ওহী নাযিল হয়? তাঁরা বললেন: তাহলে, আমরা। তিনি ফরমালেন: আমি যেহেতু তোমাদের মাঝে প্রকাশিত রয়েছি - সেহেতু, তোমরাও কি আর ঈমান না এনে পারো? বর্ণনাকারী বলেন, এরপরে আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমালেন: আমার কাছে ঈমানের দিক দিয়ে ঐ সৃষ্টি বেশি বিস্ময়কর - যে জাতি আমার (ইন্তেকালের) পরে আসবে এবং তারা আসমানী কিতাব (আল-কুরআন) পেয়ে - তাতে বর্ণিত বিধিবিধানের প্রতি ঈমান আনবে (মিশকাত: ৬০২৮ ও ইমাম বায়হাকীর দালায়িলুন নবুয়ত)।

৩। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে ’আলা হাদ্বরামী (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বলেন, কেউ আমায় জানিয়েছেন, তিনি নবীজীকে (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে শুনেছেন: এ উম্মতের শেষ পর্যায়ে এমন এক গোষ্ঠী আসবে, যাদের নেক-আমলের সওয়াব তাদের প্রথম যুগের লোকদের (সাহাবায়ে কেরামের) সমান হবে, তারা মানুষজনকে ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ করতে নিষেধ করবে এবং ফেতনাবাজদের সাথে লড়াই করবে (মিশকাত: ৬০২৯ ও ঐ দালায়িলুন নবুয়ত)।

৪। হযরত আবূ উমামা (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমান: যারা আমায় দেখেছে - তাদের জন্যে (একবার) সুখবর। আর যারা আমায় না দেখে আমার প্রতি ঈমান এনেছে - তাদের জন্যে সাতটি সুখবর (মিশকাত: ৬০৩০ ও মুসনাদে আহমাদ)!

৫। হযরত ইবনে মুহাইরিঝ (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বলেন, একদিন আমি অন্যতম সাহাবী আবূ জুমুয়াকে (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বললাম: আপনি আল্লাহর রাসূলের (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছ থেকে শুনেছেন - এমন একটি হাদীছ শরীফ আমায় বলুন? তিনি বললেন: হাঁ; আমি তোমায় চমৎকার একটি হাদীছ বলবো! একদিন আমি আল্লাহর রাসূলের (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে খাওয়া-দাওয়া করছিলাম। আবূ উবাইদা ইবনুল জাররাহও (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) আমাদের সাথে ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: ওগো আল্লাহর রাসূল! আমাদের চেয়েও উত্তম কেউ আছে কি? কেননা, আমরা আপনার প্রতি ঈমান এনেছি এবং আপনার সাথে থেকে জিহাদ করেছি। তিনি ফরমালেন: হাঁ; তোমাদের পরে এমনি এক গোষ্ঠী আসবে - যারা আমার প্রতি ঈমান আনবে; অথচ তারা আমাকে দেখিনি (মিশকাত: ৬০৩১, মুসনাদে আহমাদ ও সুনানে দারিমী)!

যাহোক, বিধর্মীদের কাছে ইসলাম প্রচার করা মানে হচ্ছে, মূলত তওহীদ ও রিসালাতেরই প্রচার করা তথা ঈমানের দাওয়াত দেওয়া। সুতরাং যখনি আপনি রিসালাত প্রচার করতে যাবেন - তখনি আপনাকে মহানবীর (’আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালাম) পারিবারিক বা বংশগত পরিচিতি অবশ্যই তুলে ধরতে হবে কিংবা যদি কোনো বিধর্মী আপনার কাছে তাঁর সম্পর্কে জানতে চায় - তখন কি আপনি তাঁর মীলাদ শরীফ তথা পবিত্র জন্মবৃত্তান্ত বা তাঁর জান্নাতি মা-বাবা-দাদা-পরদাদা (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহুম) বা পবিত্র নসবনামা পেশ না করে পারবেন? তাঁর জন্মস্থান ও জন্মতারিখ কি এড়িয়ে যেতে পারবেন? মোটেও না। আর এ দৃষ্টিকোণ থেকেই মীলাদ শরীফ বর্ণনা বা পালন করাটা ওয়াজিব - যা ওয়াহাবী বা সালাফীরাও অনায়াসে করে থাকে।

সালাফী, দেওবন্দী ও লা মাযহাবীদের জাতির পিতা তথা ওয়াহাবী জাতির জনক ইবনে তাইমিয়া লিখেছে: কিছু লোক মীলাদুন্নবীকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন এবং এটিকে খুশি ও আনন্দের কাজ বলে মনে করেন। এতে নেক-নিয়ত ও আল্লাহর রাসূলের (সল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি সম্মান দেখানোর কারণে বিরাট প্রতিদান রয়েছে - যেমনটি আমি আগেই বর্ণনা করেছি। (ইক্বতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকীম ও মজমুয়ায়ে ফাতাওয়া, ২৩তম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৬৩)।

ওয়াহাবী মতবাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ ইবনে আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ছেলে আব্দুল্লাহ লিখেছে: “কট্টর কাফির আবূ লাহাব নবীজীর (সল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেলাদত শরীফে তার দাসী সুয়াইবাকে আজাদ করে দেওয়ায় যদি প্রতি সোমবার তৃপ্তিদায়ক পানীয় পান করতে পারে - তাহলে, মীলাদুন্নবীতে খুশি যারা উদযাপন করে থাকেন, সেসব  তাওহিদী মুসলিমদের কী হবে? (মুখতাসার সীরাতুর রাসূল: ১৩ পৃষ্ঠা, হাফেয আব্দুল গফুর আহলে হাদীছ, ঝীলাম কর্তৃক প্রকাশিত)

শেষ কথা! অন্যান্য ঈদ শুধুই মুসলিম উম্মাহর জন্যে। অমুসলিমরা ওগুলো উদযাপন করলে, কোনোই ফায়দা পাবে না। কিন্তু ঈদে মীলাদুন্নবীর এমনি মহিমা যে, অমুসলিমরাও এটি উদযাপন করে উপকৃত হতে পারে - যেমনি উপকৃত হয়েছিলো আবূ লাহাব। মহান আল্লাহপাক সবাইকে এ সেরা ঈদের হক যথাযথভাবে আদায় করার তওফিক দান করুক। আমিন।

কার্টেন্সি By- Saiful Islam Rubyat

No comments:

Post a Comment